কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে আটজনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হককে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তার সঙ্গে রিমান্ডে থাকা জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার এবং জহিরুল ইসলাম নামে বুড়িচংয়ের এক আওয়ামী লীগ নেতাকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, “নতুন করে রিমান্ড আবেদন না করায় শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লার জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।”
গত বুধবার বিকালে একই আদালত শুনানি শেষে এ কে এম শহীদুল হক, এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার ও জহিরুল ইসলামের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত সোমবার আদালত তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুই দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মশিউর আলম বলেন, “আসামিরা মোট চারদিনের জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আমরা সেগুলো যাচাই করে দেখছি। তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য এখন প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
“আমরা শুক্রবার দুপুরে আসামিদের আদালত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি। এরপর আদালতের নির্দেশে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
গত বুধবার দ্বিতীয় দফা রিমান্ড আদেশ হওয়ার পর কুমিল্লা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) কাইমুল হক ওরফে রিংকু বলেন, “মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
“কারা নাশকতা করেছে, কারা গানপাউডার দিয়েছে, কার নির্দেশে নাশকতা হয়েছে-এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।”
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে আটজনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিন চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে প্রধান আসামি এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হুকুমদাতা হিসেবে আসামি করে প্রথম মামলাটি করেছিলেন।
একই ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বর মো. আবুল খায়ের নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে কুমিল্লার আদালতে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, এ কে এম শহীদুল হক ও র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ, কুমিল্লার তৎকালীন পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে পেট্রলবোমা হামলার শিকার বাসটি বাদীর তত্ত্বাবধানে চলত বলে তিনি দাবি করেছেন।