ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় বাসের ধাক্কায় প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের পাঁচজন নিহত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জ উপজেলায় এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় ওই দুর্ঘটনায় আরও অন্তত চারজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম।
নিহতরা হলেন, রাজধানীর জুরাইনের বাসিন্দা আমেনা হক (৪৫), তার দুই মেয়ে ইমি (২৭) ও রিয়া (১২) এবং দুই বছর বয়সী নাতি আয়াত।
এছাড়া মোটরসাইকেলের আরোহী এক শিশুও মারা গেছে, তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের সফিকুল ইসলাম বলেন, ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় মাওয়াগামী লেনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেটকারটিকে পেছন থেকে প্রচণ্ড গতিতে আসা বেপারী পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। এতে দুমড়ে মুচড়ে যায় প্রাইভেটকারটি।
“কারটি ছাড়াও দুর্ঘটনা কবলিত হয় আরও একটি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল। ঘটনাস্থলেই এক শিশুর মৃত্যু হয়। আহত হন আরও আটজন।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে চার জনের মৃত্যু হয়।
নিহতদের মরদেহ রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
হাসপাতালে নিহত আমেনা হকের ভাতিজা মো. ইসা খান বলেন, “ফুফার মৃত্যুতে তারা জুরাইন থেকে সপরিবারে গোপালগঞ্জ যাচ্ছিল। পথে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।”
টোলপ্লাজায় প্রাইভেটকারটির ঠিক সামনে টোল প্রদানের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল একটি মোটরসাইকেল। সেটির চালকের সাত বছরের বয়সী ছেলে দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
মিটফোর্ট হাসপাতালে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “ওই গাড়িটা (বাসটি) আরেকটা গাড়িকে (প্রাইভেট কার) ডইলা নিয়া আইসা আমারে বারি (ধাক্কা) দিয়া একদম টোল প্লাজার ভেতরে ফেলে দেয়। আমার পায়ে টায়ে ব্যথা নিয়ে তাকিয়ে দেখলাম আমার সন্তানের একদম মাথা টুকরা হয়ে গেছে।”
আহাজারি করে বলেন এই বাবা বলেছিলেন, “আমার ছেলে বলে, ‘আব্বু টোল আমি দেই, আমি দেই’। ওরে শখের ধন, এখন আর কে দিবে টোল?”
সফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর পুলিশ বাসটি আটক করেছে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার পর এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গত ৬ দিনে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আটটি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।