সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে করা মিথ্যা মামলায় খালাস পেয়ে ১৩ বছর পর প্রবাস জীবনের ইতি টেনে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বদেশে ফিরছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে ৫ বারের নির্বাচিত সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ।
সৌদি আরব থেকে রওনা দিয়ে বেলা ১১ টা ৪০ মিনিটে ঢাকা হযরত শাহ জালাল বিমান বন্দরে বিমানযোগে স্বদেশে অবতরণ করেন তিনি। পরে, বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন কায়কোবাদ।
এর আগে সকাল থেকেই ঢাকায় বিমানবন্দরে জড়ো হতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। উপজেলা বিএনপির ভাষ্যমতে, এদিন প্রায় দুই হাজার মাইক্রো, বাস মুরাদনগর থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। প্রায় অর্ধ লক্ষ নেতাকর্মী তাদের প্রিয় নেতাকে বরণ করতে জড়ো হোন সেখানে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বিমানবন্দরের সি.এন্ড.এফ ভবনের সামনের মাঠ ইজারাদার কর্তৃক বরাদ্দ নিয়েছেন তারা।
এদিকে, নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় নেতাকে এক যুগ পর সরাসরি দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। পরে, বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে বিএনপি নেতা কায়কোবাদের গাড়িবহর শেরে বাংলা নগর ‘জিয়া উদ্যান’ প্রাঙ্গনে যান। সেখানে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মোফাজ্জ্বল হোসাইন কায়কোবাদ শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান। এসময়, বিএনপির এই নেতা দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন ও শহীদ জিয়াউর রহমানের জন্য দোয়া কামনা করেন।
পরে, জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বলেন, যারা আন্দোলনে আহত হয়েছেন শাহাদাত বরণ করেছেন এবং লড়াই করেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। যারা ৭১ এর স্বাধীনতা ও বর্তমান স্বাধীনতায় শহীদ হয়েছেন আমি আল্লাহর কাছে তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করি। আমরা যারা একত্বের জন্য স্বাধীনতা করেছিলাম, তারা যদি স্বার্থের কারণে আজ বিভক্ত হই তাহলে ৯৬ ও ২০০১ সালের মতো ঘটনা আবারো ঘটবে। লগি-বৈঠার আন্দোলন হতে পারে। আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
এসময় সংস্কার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংস্কার করবে গণতান্ত্রিক সরকার। জনগণ সরকার নির্বাচন করবে এবং সেই সরকারই সংস্কার করবে। ড. ইউনুস নিশ্চয়ই একজন ভালো মানুষ। আমরা ভাগ্যবান যে উনার মত একজন মানুষকে আমরা এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার হিসেবে পেয়েছি। এটা আল্লাহর রহমত এবং আল্লাহর দয়ার কারণেই হয়েছে। উনি আমাদের অবস্থা বুঝবে কারণ উনি নিজেও মিথ্যা মামলার আসামি। উপদেষ্টা পরিষদে একজন বা দুইজন এমন রয়েছে, যারা মিথ্যা মামলার সম্মুখীন হয়েছে। একমাত্র তারাই আমাদের কষ্ট বুঝবে আর বাকিরা বুঝবে না। আপনারা দোয়া করবেন আল্লাহ যাতে আমাদের এমন তৌফিক দান করে যাতে আমরা শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করতে না হয়।